ধানের ব্লাস্ট (Blast) একটি মারাত্মক ছত্রাকজনিত রােগ। পাইরিকুলারিয়া গ্রিসিয়া (Pyricularia grisea) নামক ছত্রাক দ্বারা হয়ে থাকে। হালকা মাটি বা বেলেমাটি যার পানি ধারণক্ষমতা কম সেখানে রােগ বেশি হতে দেখা যায়। জমিতে মাত্রাতিরিক্ত ইউরিয়া সার এবং প্রয়ােজনের তুলনায় কম পটাশ সার দিলে এ রােগের আক্রমণ বেশি হয়। দীর্ঘদিন জমি শুকনা অবস্থায় থাকলেও এ রােগের আক্রমণ হতে পারে। রাতে ঠান্ডা, দিনে গরম এবং শিশির থাকলে এ রােগের প্রকোপ বেড়ে যায়।
ব্লাস্ট রোগ যেভাবে ছড়ায়
★ রোগাক্রান্ত গাছের জীবাণু বীজ, বাতাস, কীটপতঙ্গ বা পোকা ও আবহাওয়ার মাধ্যমে এক জমি থেকে অন্য জমিতে ছড়িয়ে পড়ে।
★ ধানের ব্লাস্ট রোগ বীজের মাধ্যেমে এক মৌসুম হতে অন্য মৌসুমে ছড়ায়।
★ রাতে ঠাণ্ডা, দিনে গরম ও সকালে পাতলা শিশির জমা হলে এ রােগ দ্রুত ছড়ায়।
★ অধিক মাত্রায় নাইট্রোজেন সার এবং বাতাসের আর্দ্রতা এ রোগের প্রকোপ বাড়ায়।
ব্লাস্ট রোগের অনুকূল পরিবেশঃ
রাতে ঠাণ্ডা (২০-২২°সে.) দিনে গরম (২৫-২৮°সে.) ও সকালে পাতলা শিশির জমা হলে এ রোগ দ্রুত ছড়ায়। হালকা মাটি বা বেলেমাটি যার পানি ধারণক্ষমতা কম সেখানে রোগ বেশি হতে দেখা যায়। জমিতে মাত্রাতিরিক্ত ইউরিয়া সার এবং প্রয়োজনের তুলনায় কম পটাশ সার দিলে এ রোগের আক্রমণ বেশি হয়। দীর্ঘদিন জমি শুকনা অবস্থায় থাকলেও এ রোগের আক্রমণ হতে পারে। রোগাক্রান্ত বীজ ব্যবহার ও রোগ প্রবণ জাতের ধান চাষ করলে।জমিতে বা জমির আশেপাশে অন্যান্য পোষক গাছ বা আগাছা থাকলে।
পাতা ব্লাস্টের লক্ষণ
★ আক্রান্ত পাতায় প্রথমে ডিম্বাকৃতির ছােট ছােট ধূসর বা সাদা ছাঁই বর্ণের দাগ দেখা যায়। দাগগুলাের চারদিক গাঢ় বাদামি বর্ণের হয়ে থাকে।
★ এ দাগ ধীরে ধীরে বড় হয়ে চোখের আকৃতি ধারণ করে। অনেক দাগ একত্রে মিশে পুরাে পাতাটাই মেরে ফেলতে পারে।বড় দাগগুলাের (১.০-১.৫Xo.৩-০.৫ সেন্টিমিটার) কেন্দ্র ভাগ ধূসর বর্ণের হয়।
★ এ রােগে ব্যাপকভাবে আক্রান্ত হলে জমিতে মাঝে মাঝে পুড়ে যাওয়ার মতাে মনে হয়।
★ অনেক ক্ষেত্রে খােল ও পাতার সংযােগস্থলে কাল দাগের সৃষ্টি হয়। যা পরবর্তীতে পচে যায় এবং পাতা ভেঙে পড়ে ফলন বিনষ্ট হয়।
★ শেষ পর্যন্ত পুরো পাতা, এমনকি পুরো গাছটিই মারা যেতে পারে।
গিঁট বা নােড ব্লাস্ট
নেক বা শীষ ব্লাস্ট
★ শীষের গোড়া আক্রান্ত হলে সেখানে বাদামী দাগ পড়ে। শীষের গোড়া বা যেকোন শাখা বা ধান আক্রান্ত হতে পারে।
★ শীষের গোড়ায় আক্রমণ হলে সে অংশ পচে যায় এবং শীষ ভেঙে পড়ে।
★ ধান পুষ্ট হওয়ার আগে এ রোগের আক্রমণ হলে সব ধান চিটা হয়।
ব্লাস্ট রােগের প্রতিরােধ ব্যবস্থা
১.রােগ প্রতিরােধী জাত ব্যবহার করতে হবে।
২.মাটিতে জৈব সারসহ সুষম মাত্রায় সব ধরনের সার ব্যবহার করতে হবে।
৩.আক্রান্ত জমির খড়কুটা পুড়িয়ে ফেলতে হবে এবং ছাই জমিতে মিশিয়ে দিতে হবে।
৪.সুস্থ গাছ হতে বীজ সংগ্রহ করতে হবে, দাগি বা অপুষ্ট বীজ বেছে ফেলে দিয়ে সুস্থ বীজ ব্যবহার করতে হবে।
Planning and Implementation: Cabinet Division, A2I, BCC, DoICT and BASIS